August 3, 2025, 2:53 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মূল্য দেয় না কেউ, ভেসে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা : খোদ জাতিসংঘ হাজার কোটি টাকার গড়াই নদী খনন/ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সঠিক ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতার অভাবে ব্যর্থতা ৫ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৭ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ কার্যকর/ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেশে প্রতি চারজনের একজন বহুমাত্রিক দরিদ্র, শিশুদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বছরে ১০-১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: মানুষের প্রকৃত আয় এখনো ঋণাত্মক হোমল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স/১ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে যশোরে মামলা গোপন তৎপরতার আশঙ্কা: ১১ দিনের ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছে পুলিশ

বই নেই/কুষ্টিয়ায় বেশীরভাগ স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি অর্ধেকেরও কম

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বেশীরভাগ বই হাতে না পাওয়ায় নতুন বছরের শুরুতে হোঁচট খেয়েছে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি। বছরের প্রথম মাস প্রায় শেষ। এখনো বেশিরভাগ বই হাতে পায়নি প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা।
খোদ সরকারের বই প্রণয়ন ও বিতরণ প্রতিষ্ঠান শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্য বলছে, এখনো ৫৪ শতাংশ বই বিতরণ করা যায়নি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার একাধিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিকের কোন শ্রেণীতে তিনটি, কোনটাই দুটি বিষয়ের বই বিতরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকেও একই অবস্থা। অন্যদিকে ইংরেজি ভার্সনের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো আসেনি।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বই না আসায় এখনো পুরোদমে ক্লাস শুরু করা হয়নি। অনেক বিদ্যালয়ে দুটি বা তিনটি করে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। সেখানেও উপস্থিতি সন্তোষজনক নয়। বই না থাকায় ক্লাসে মনোযোগী হচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। গ্রামীণ এলাকার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে পুরনো বই দিয়ে দু-একটি ক্লাস করানো হচ্ছে। তাও আবার এক বেঞ্চে একটি বই দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে। তবে অনেকে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন কপি সংগ্রহ করে পড়শোনা শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বল্প আয়ের অভিভাবকরা।
একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রাক-প্রাথমিক, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো বই বিদ্যালয়ে পৌঁছায়নি। পুরনো বইও নেই। কয়েকটি বই থাকায় সেগুলো পাঠদানের সময় ক্লাসে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়। ক্লাস শেষে আবার নিয়ে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে এক বেঞ্চের শিক্ষার্থীদের একটি বই দিয়ে ক্লাস করাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীরা বই না পেলে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। পড়াশোনার আগ্রহ কমে যায়। যেহেতু গত বছর আন্দোলন ও নানা কারণে শিক্ষার্থীরা একটা মানসিক অস্থিরতার মধ্যে আছে, তাই তাদের দ্রুত বই দিয়ে ক্লাসে ফেরাতে হবে।
২০১০ সাল থেকে সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছে। এ বছরের জন্য প্রাক-প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের জন্য ৩০ কোটি ৯৫ লাখ ৪১ হাজার ৪৮৬টি এবং প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই রয়েছে। এসব বই ছাপানো ও বিতরণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
এনসিটিবির ২২ জানুয়ারির তথ্য বলছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৪৬ শতাংশ পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৭৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিক স্তরের ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়েছে সাড়ে ১৮ কোটি আর এখনো বাকি রয়েছে ১২ কোটির বেশি বই। এ কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বই পায়নি। স্কুলে গিয়ে কেউ কেউ খুশি হলেও, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হয়েছে হতাশ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন, নতুন শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করে পুরনো শিক্ষাক্রমে ৬৯১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন, পা-ুলিপি তৈরি করতে বিলম্ব ও তিন মাস দেরিতে পাঠ্যবই ছাপার কার্যক্রম শুরু করার কারণে সবার হাতে সব বই পৌঁছাতে মার্চ পর্যন্ত লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে বিনামূল্যের পাঠ্যবই না পেয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকে ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বইয়ের পেছনে ছুটছেন। অনেক জায়গায় খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই, যা চড়া দামে কিনছেন অভিভাবকরা। বিনামূল্যের পাঠ্যবই লাইব্রেরিতে বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রায়ই বিভিন্ন লাইব্রেরি ও বইয়ের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার সেট বই জব্দ করা হয়েছে।
বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা এনসিটিবি আগেই বলেছিল ফেব্রুয়ারির মধ্যে বই পাবে শিক্ষার্থীরা।
শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে বছরের শুরুতেই এই অরাজকতা সারাবছর বইতে হবে বলে মনে করেন অনেক অভিভাবক।
কুষ্টিয়া পাবলিক স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শাহনাজ আমান মনে করেন, যে কারনই ঘটুক শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার দিকে আগেই নজর দেয়া উচিত ছিল। তিনি জানান, এরপরও তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন অন্তত শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসুক। বই ছাড়াও শ্রেণী কার্যক্রমের একাধিক বিষয় রয়েছে সেগুলো নিয়ে তাদের শিক্ষামুখী রাখার দরকার বলে তিনি মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net